বিড়ালরা বিভিন্ন কারণে স্ট্রেস অনুভব করতে পারে। নিচে কিছু সাধারণ কারণ দেওয়া হলো:

১. পরিবেশে পরিবর্তন:

  • নতুন ঘর বা পরিবেশ পরিবর্তন বিড়ালদের জন্য বেশ স্ট্রেসফুল হতে পারে। বিড়ালরা আঞ্চলিক (Territorial) প্রাণী, তাই তাদের নিরাপত্তা অনুভূতি ব্যাহত হলে তারা অস্থির হতে পারে।
  • নতুন আসবাবপত্র, নতুন রুম বা ঘরের সাজসজ্জা পরিবর্তনও তাদের স্ট্রেস তৈরি করতে পারে।

২. শব্দের অতিরিক্ত পরিমাণ:

  • উচ্চ আওয়াজ, যেমন বাজ, বজ্রপাত, ভ্যাকুয়াম ক্লিনার, বা উচ্চস্বরে কথা বলাও বিড়ালের জন্য চাপের কারণ হতে পারে।
  • হঠাৎ করে কোন শব্দ বা প্রাত্যহিক শব্দের পরিবর্তনও বিড়ালদের অস্থির করতে পারে।

৩. নতুন মানুষ বা পশু:

  • বাসায় নতুন পোষা প্রাণী বা মানুষের আগমন বিড়ালদের জন্য চাপের কারণ হতে পারে। বিড়ালরা আঞ্চলিক (Territorial) প্রাণী, এবং নতুন ব্যক্তির উপস্থিতি তাদের নিরাপত্তার অনুভূতি হুমকির মধ্যে ফেলতে পারে।

৪. রুটিন পরিবর্তন:

  • খাবারের সময়, ঘুমের রুটিন বা এককভাবে বেশি সময় একা থাকতে হলে বিড়ালদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিতে পারে।

৫. উৎসাহের অভাব:

  • বিড়ালরা খেলার এবং নতুন কিছু আবিষ্কারের জন্য আগ্রহী। যদি তাদের পর্যাপ্ত মানসিক বা শারীরিক উত্তেজনা না দেওয়া হয় (যেমন খেলনা, খেলা বা স্ক্র্যাচিং পোস্ট), তবে তারা একঘেয়েমি বা স্ট্রেস অনুভব করতে পারে।

৬. স্বাস্থ্য সমস্যা:

  • অসুস্থতা বা ব্যথাও বিড়ালকে উদ্বিগ্ন এবং স্ট্রেসফুল করে তোলে। বিড়ালরা সাধারণত তাদের অসুবিধা গোপন রাখে, তাই স্ট্রেস কখনো কখনো একটি শারীরিক সমস্যার লক্ষণ হতে পারে।

৭. অপ্রত্যাশিতভাবে স্পর্শ:

  • বিড়ালদের নিজের মতো করে আদর করা পছন্দ। হঠাৎ করে তাদের তুলে ফেলা বা জোরপূর্বক আদর করা তাদের জন্য স্ট্রেস হতে পারে।

৮. বিচ্ছিন্নতা:

  • যেসব বিড়াল তাদের মালিকের সঙ্গে খুব যুক্ত থাকে, তারা যখন দীর্ঘ সময় একা থাকে, তখন উদ্বেগ অনুভব করতে পারে, যার ফলস্বরূপ ধ্বংসাত্মক আচরণ বা অতিরিক্ত ডাকাডাকি হতে পারে।

৯. পরিবারের পরিবেশ পরিবর্তন:

  • নতুন পোষা প্রাণী, নতুন সদস্য (যেমন নতুন শিশু) বা প্রিয় কাউকে হারানোও বিড়ালের জন্য স্ট্রেস তৈরি করতে পারে।

১০. নিরাপদ স্থান না থাকা:

  • বিড়ালদের জন্য কিছু নিরিবিলি স্থান প্রয়োজন যেখানে তারা বিশ্রাম নিতে পারে বা আক্রমণের সময় আশ্রয় নিতে পারে। নিরাপদ স্থান না পেলে তারা উদ্বিগ্ন হতে পারে।

স্ট্রেস কমানোর উপায়:

  • নিরাপদ স্থান তৈরি করুন: বিড়ালের জন্য শান্ত, আরামদায়ক স্থান তৈরি করুন, যেখানে তারা অনুভব করতে পারে নিরাপদ।
  • রুটিন বজায় রাখুন: খাবার এবং খেলার সময় ঠিক রাখুন, যাতে বিড়াল অস্থির না হয়।
  • ধীর গতিতে পরিচয় করান: নতুন পোষা প্রাণী বা মানুষের সাথে পরিচয় করানোর সময় ধীরে ধীরে এবং তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী পরিচয় করান।
  • খেলনা এবং উত্তেজনা: তাদের মানসিক এবং শারীরিকভাবে উদ্দীপিত রাখতে খেলনা এবং খেলার উপাদান সরবরাহ করুন।
  • আরামদায়ক সংস্পর্শ: বিড়ালকে আদর করুন, তবে তাদের অস্বস্তি হওয়ার মতো আচরণ করবেন না।

যদি স্ট্রেস দীর্ঘস্থায়ী হয় বা আচরণে বড় পরিবর্তন আসে, তবে একটি ভেটেরিনারি বা পশু আচরণবিদের পরামর্শ নেওয়া ভালো।